بِسْمِ اللهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيْمِ
পরম করুণাময় ও অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে
গোসলের পূর্বে অযু করা
২৪৭। হাদীসঃ হযরত আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লা-হু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর অভ্যাস ছিল, সহবাসের পর তিনি পবিত্রতার গোছল করতেন, প্রথমতঃ উভয় হাত ধৌত করে নিতেন। তারপর নামাযের অযুর ন্যায় অযু করে নিতেন। তারপর পানিতে অঙ্গুলি ভিজিয়ে তা দ্বারা মাথায় চুলের জটগুলো খেলাল করে নিতেন্ তারপর হাত দ্বারা তিন অঞ্জলি পানি মাথায় বইয়ে দিতেন। তারপর সমগ্র শরীরে পানি বইয়ে দিতেন।
২৪৮। হাদীসঃ হযরত মায়মুনা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, পবিত্রতার গোছলের পূর্বে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লা-হু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রথমে নামাযের অযুর ন্যায় অযু করলেন, কিন্তু পা ধৌত করলেন না, লজ্জাস্থান ধৌত করে নিলেন এবং তাতে যা কিছু নাপাকী লেগেছিল তাও ধৌত করলেন। তারপর সমগ্র শরীরে পানি ঢেলে দিলেন। তারপর অন্য জায়গায় সরে গিয়ে পা ধৌত করলেন। এ ছিল রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লা-হু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর পবিত্রতার গোসলের নিয়ম।
২৪৯। হাদীসঃ হযরত আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, আমি এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লা-হু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম একই পাত্র হতে পানি নিয়ে এক সাথে পবিত্রতার গোছল করতাম। পাত্রটির নাম 'ফারুক' (উক্ত পাত্রে তিন সা' বা দশ সের পরিমাণ পানি ধরত)
২৫০। হাদীসঃ হযরত আবু সালমা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, একদা আমি এবং আবদুল্লাহ ইবনে ইয়াযীদ (রাঃ) (হযরত আয়েশা (রাঃ) -এর সাথে দুধ ভাই) হযরত আয়েশা (রাঃ)-এর কেদমতে উপস্থিত হলাম। হযরত আয়েশার দুধ ভাই আবদুল্লাহ ইবনে ইয়াযীদ (রাঃ) তাকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লা-হু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর গোসল সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলেন। অতঃপর তিনি একটি পাত্র নিয়ে আসতে বললেন, যাতে এক সা পরিমাণ পানি সংকুলান হত। তিনি উক্ত পানি দ্বারা গোসল করলেন এবং মাথায়ও পানি ঢেলে দিলেন। সে সময় আমাদের এবং হযরত আয়েশা (রাঃ)-এর মধ্যখানে কেবল একটা পর্দা লটকানে ছিল।
২৫১। হাদীসঃ হযরত আবু জাফর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, একদা তিনি এবং তাঁর পিতা হযরত জাবের (রাঃ)-এর কাছে ছিলেন। তাঁর কাছে আরো লোক উপস্থিত ছিলেন। তাঁরা হযরত জাবের (রাঃ)-কে গোসল সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলেন। উত্তরে তিনি বললেন, এক সা' (সাড়ে তিন সের) পানিই তোমার জন্য যথেস্ট হবে। অতঃপর উপস্থিত লোকদের একজন তাঁকে বললেন, এক সা' পানি আমার জন্য যথেষ্ট নয়। তখন হযরত জাবের (রাঃ) বললেন, এক সা' পানি ঐ সম্মানিত ব্যক্তির জন্য যথেষ্ট ছিল, যাঁর মাথার চুল তোমার হতে অধিক ছিল এবং যিনি তোমার হতে অধিক উত্তম ছিলেন (অর্থাৎ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লা-হু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম)। অতঃপর তিনি এক কাপড় পরিহিত অবস্থায় আমাদের ইমামতি করেন।
২৫২। হাদীসঃ হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লা-হু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং মায়মুনা (রাঃ) একই পাত্র হতে পানি নিয়ে একত্রে পবিত্রতার জন্য গোসল করতেন।
২৫৩। হাদীসঃ হযরত জোবায়ের ইবনে মুতয়িম (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লা-হু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, আমি মাথায় তিন বার করে পানি ঢেলে থাকি। অতঃপর উভয় হাত দ্বারা ইশারা করে দেখিয়েছেন।
২৫৪। হাদীসঃ হযরত জাবির ইবনে ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লা-হু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজের মাথায় তিনবার পানি ঢালতেন।
২৫৫। হাদীসঃ হযরত আবু জা’ফর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, আমাকে একদা হযরত জাবের (রাঃ) বললেন, একবার তোমার চাচাতো ভাই ‘মুহাম্মদ বিন হাসান বিন মুহাম্মদ বিন হানাফিয়া’ আমাকে প্রশ্ন করেন। কিভাবে পবিত্রতা গোসল করতে হয়? তখন আমি বললাম, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লা-হু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্বীয় হাত দ্বারা তিন অঞ্জলি পানি নিতেন, তা মাথায় ঢেলে দিতেন। তারপর সমগ্র শরীরে পানি ঢালতেন। তারপর হাসান আমাকে প্রশ্ন করলেন, কোন ব্যক্তি মাথায় অধিক চুলওয়ালা, আমি বললাম, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লা-হু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম তোমার হতে অধিক চুলওয়ালা ছিলেন?
২৫৬। হাদীসঃ হযরত মায়মুনা (রাঃ) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লা-হু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর পবিত্রতার গোছলের জন্য পানি রাখলাম। তিনি উক্ত পানি দ্বারা প্রথমত হাত দু’বার অথবা তিন বার, তারপর ডান হাত দ্বারা বাম হাতে পানি নিয়ে পুরুষাঙ্গ ধৌত করলেন। তারপর হাত মাটিতে মালিশ করলেন। অতঃপর কুলি করলেন, নাকে পানি দিলেন এবং চেহারা ও হস্তদ্বয় কনুই পর্যন্ত ধৌত করলেন। তারপর সারা শরীরে পানি ঢেলে দিলেন। তারপর উক্ত স্থান হতে একটু সরে গিয়ে পা ধৌত করে নিলেন।
২৫৭। হাদীসঃ হযরত আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লা-হু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম পবিত্রতার গোছলের পূর্বে ‘হেলাব’-এর ন্যায় সুগন্ধ বস্তু চেয়ে নিতেন। তারপর তা হাতে নিয়ে প্রথমত মাথার ডান দিকে তারপর বাম দিকে লাগাতেন। তারপর উভয় হাত দ্বারা মাথায় পানি ঢালতেন।
২৫৮। হাদীসঃ হযরত মায়মুনা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লা-হু 'আলাইহি ওয়াসাল্লামের জন্য গোসলের পানি প্রস্তুত করলাম। অতঃপর তিনি ডান হাত দিয়ে বাম হাতের উপর পানি ঢাললেন। তারপর তিনি মাটিতে ভর দিলেন এবং মাটি দ্বারা হাত ঘষলেন অতঃপর ধুয়ে ফেললেন। তারপর নাকে পানি দিলেন এবং কুলি করলেন। অতঃপর মুখমন্ডল ধৌত করলেন এবং মাথার উপর পানি ঢেলে দিলেন। এরপর একটু সরে দাঁড়িয়ে পা মোবারক ধৌত করলেন। অতঃপর একটি রুমাল/গামছা আনা হলে তা দ্বারা তিনি শরীর মুছেন নি।
২৫৯। হাদীসঃ হযরত মায়মুনা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লা-হু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম জানাবাতের গোসল করলেন। তিনি নিজের লজ্জাস্থান ধুয়ে ফেললেন। তারপর হাত দেওয়ালে ঘষলেন এবং তা ধুইলেন। তারপর নামাযের অযুর মত অযু করলেন। গোসল শেষ করে তিনি তাঁর দু’পা ধুইলেন।
২৬০। হযরত আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, আমি এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লা-হু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম একই পাত্র হতে এক সাথে পবিত্রতার জন্য গোছল করতাম। পাত্রে আমাদের উভয়ের হাত রাখতাম (হাত ধুয়ে নিয়ে এরুপ করতেন)।
২৬১। হাদীসঃ হযরত আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লা-হু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর অভ্যাস ছিল, তিনি পবিত্রতার গোছল করতে প্রথমে হাত ধৌত করে নিতেন।
২৬২। হাদীসঃ হযরত আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি ও রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লা-হু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম একই পাত্রের পানি নিয়ে জানাবাতের গোসল করতাম।
২৬৩। হযরত আনাস (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লা-হু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং উম্মাহাতুল মো,মেনীন একই পাত্রে পানি দ্বারা গোসল করতেন।
২৬৪। হাদীসঃ হযরত মায়মূনা বিনতে হারেস (রাঃ) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লা-হু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর জন্য গোসলের পানি রাখলাম, তিনি উভয় হাতে পানি ঢেলে দু’বার করে বা তিনবার করে তা ধুইয়ে নিলেন। এরপর তিনি ডান হাতে পানি নিয়ে বাম হাতে ঢাললেন এবং তাঁর লজ্জাস্থান ধুইলেন। তারপর তাঁর মাথা তিনবার ধুইলেন এবং তাঁর সারা শরীরে পানি ঢাললেন। অবশেষে সেখান একটু সরে গিয়ে তাঁর দু’পা ধুয়ে ফেললেন।
২৬৫। হাদীসঃ হযরত উম্মুল মো’মেনীন হযরত মায়মুনা (রাঃ) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লা-হু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর জন্য গোসলের পানি রাখলাম এবং পর্দার ব্যবস্থা করলাম। তিনি প্রথমে পানি ঢেলে একবার অথবা দু’বার হাত ধৌত করে নিলেন। সোলায়মান বলেন, আমার জানা নেই তিনি তৃতীয় বারের কথা বলেছেন কি না? অতঃপর ডান হাত দ্বারা বাম হাতের উপর পানি ঢেলে পুরুষাঙ্গ ধৌত করেন। তারপর হাতখানা মাটি অথবা দেয়ালের সাথে মালিশ করেন। তারপর কুলি করেন, নাকে পানি দিলেন এবং চেহারা ও মাথা ধৌত করে নিলেন। অতঃপর সমগ্র বদনে পানি ঢেলে দিলেন। অতঃপর সে স্থান থেকে একটু সরে গিয়ে পা ধৌত করেন। তারপর আমি হুযুর সাল্লাল্লা-হু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর জন্য একখানা রুমাল নিয়ে আসলাম। তিনি হাতে এমনভাবে ইঙ্গিত করলেন যাতে তিনি তা নেয়ার ইচ্ছা করলেন না।
২৬৬। হাদীসঃ হযরত মুহাম্মদ বিন মুনতাশের (রাঃ) থেকে বর্ণিত, আমি একদা (হযরত ইবনে ওমরের মন্তব্য সম্পর্কে) হযরত আয়েশা (রাঃ)-এর কাছে আলোচনা করলাম। তিনি শুনে বললেন, আবু আবদুর রহমান ইবনে ওমর (রাঃ)-এর উপর আল্লাহ রহম করুন। আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লা-হু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে খোশবু লাগিয়ে দিতাম। অতঃপর তিনি সকল বিবির কাছে যেতেন। তাদের সাথে শয্যা গ্রহণ করতেন। তারপর প্রাতঃকালে এহরাম বাঁধতেন। তাঁর শরীর থেকে খোশবু বিভিন্ন দিকে ছড়াত।
২৬৭। হাদীসঃ হযরত আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লা-হু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম আযওয়াজে মোতাহহারাতের সাথে মিলনের জন্য রাতে বা দিবাভাগে পর পর যেতেন। তাঁদের সংখ্যা ছিল এগারো জন। হযরত কাতাদা বলেন, আমি হযরত আনাস (রাঃ)-কে বললাম, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লা-হু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কি এত শক্তি রাখতেন? তিনি বললেন, আমরা বলাবলি করতাম, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লা-হু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে ত্রিশ জন পুরুষের শক্তি দেয়া হয়েছে। সাঈদ কাতাদা থেকে বর্ননা করেন, আনাস (রাঃ) আমাকে নয় জন স্ত্রীর কথা বলেছেন।
২৬৮। হাদীসঃ হযরত আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিত, আমি এমন এক ব্যক্তি ছিলাম যে, আমার ‘মযী’ অধিক বের হত। এ মাসআলা সম্পর্কে অবগত হওয়ার জন্য আমি এক ব্যক্তিকে আদেশ করলাম, তিনি যেন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লা-হু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে প্রশ্ন করে জেনে নেন। যেহেতু তাঁর বেটী আমার স্ত্রী (আমি তাঁকে এ মাসআলা জিজ্ঞাসা করতে লজ্জা অনুভব করছি)। অতঃপর তিনি এ মাসআলা জিজ্ঞাসা করলে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লা-হু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, মযী বের হওয়ার পর অযু করতে হবে এবং পুরুষাঙ্গ ধুয়ে নিতে হবে।
২৬৯। হাদীসঃ হযরত মুহাম্মদ ইবনুল মুনতাশের (রাঃ) তাঁর পিতা থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, আমি হযরত আয়েশা (রাঃ)-কে ইবনে ওমর (রাঃ)-এর উক্তি সম্পর্কে প্রশ্ন করলাম। ইবনে ওমর (রাঃ) বলতেন, প্রাতঃকালে মোহরেম হিসেবে আমার শরীর থেকে খোশবুর সুগন্ধ বিকশিত হবে এটা আমি পছন্দ করি না। হযরত আয়েশা (রাঃ) বলেন, আমি স্বয়ং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লা-হু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে খোশবু লাগিয়েছি। তারপর তিনি তাঁর বিবিদের সাথে মেলামেশা করে গোসলের পর প্রাতঃকালে মোহরেম হয়েছেন, তখনো তাঁর শরীরে খোশবু ছিল।
২৭০। হাদীসঃ হযরত আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, মনে হয় আমি এখনো দেখতে পাচ্ছি, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লা-হু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সিথিতে সুগন্ধির চমক দেখা যাচ্ছে, যখন তিনি এহরাম অবস্থায় ছিলেন।
২৭১। হাদীসঃ হযরত আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লা-হু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর অভ্যাস ছিল, যখন তিনি পবিত্রতার স্নান করতেন, প্রথমে হাতদ্বয় ধৌত করে নিতেন। তারপর নামাযের অযুর ন্যায় অযু করতেন, তারপর গোসল করতেন। তারপর মাথার চুল এমনভাবে খেলাল করতেন, যাতে ধারণা হত, বোধহয় এতক্ষণে মাথার চামড়া ভিজে গেছে। তখন তিন বার মাথায় পানি দিতেন। তারপর সমগ্র শরীর ধৌত করে নিতেন।
আয়েশা (রাঃ) আরো বলেন, আমি এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লা-হু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম একই পাত্রের পানি দ্বারা এক সাথে গোসল করতাম। আমরা উভয়ে পাত্র হতে একত্রে অঞ্জলি ভরে পানি নিতাম।
২৭২। হাদীসঃ হযরত মায়মূনা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লা-হু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম জানাবাতের গোসলের জন্য পানি রাখলেন। তারপর দু'বার বা তিনবার ডান হাতে বাম হাতের উপর পানি ঢাললেন এবং তাঁর লজ্জাস্থান ধুইলেন। তারপর তাঁর হাত মাটিতে বা দেওয়ালে দু'বার বা তিনবার ঘষলেন। পরে তিনি কুলি করলেন ও নাকে পানি দিলেন এবং চেহারা ও দু'হাত ধুইলেন। তারপর তাঁর মাথায় পানি ঢাললেন এবং তাঁর শরীর ধুইলেন। একটু সরে গিয়ে তাঁর পা ধুইলেন। মায়মূনা (রাঃ) বলেন, এরপর আমি একখন্ড কাপড় দিলে তিনি তা নিলেন না, বরং নিজ হাতে পানি ঝেড়ে ফেলতে থাকলেন।
২৬৯। হাদীসঃ হযরত মুহাম্মদ ইবনুল মুনতাশের (রাঃ) তাঁর পিতা থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, আমি হযরত আয়েশা (রাঃ)-কে ইবনে ওমর (রাঃ)-এর উক্তি সম্পর্কে প্রশ্ন করলাম। ইবনে ওমর (রাঃ) বলতেন, প্রাতঃকালে মোহরেম হিসেবে আমার শরীর থেকে খোশবুর সুগন্ধ বিকশিত হবে এটা আমি পছন্দ করি না। হযরত আয়েশা (রাঃ) বলেন, আমি স্বয়ং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লা-হু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে খোশবু লাগিয়েছি। তারপর তিনি তাঁর বিবিদের সাথে মেলামেশা করে গোসলের পর প্রাতঃকালে মোহরেম হয়েছেন, তখনো তাঁর শরীরে খোশবু ছিল।
২৭০। হাদীসঃ হযরত আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, মনে হয় আমি এখনো দেখতে পাচ্ছি, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লা-হু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সিথিতে সুগন্ধির চমক দেখা যাচ্ছে, যখন তিনি এহরাম অবস্থায় ছিলেন।
২৭১। হাদীসঃ হযরত আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লা-হু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর অভ্যাস ছিল, যখন তিনি পবিত্রতার স্নান করতেন, প্রথমে হাতদ্বয় ধৌত করে নিতেন। তারপর নামাযের অযুর ন্যায় অযু করতেন, তারপর গোসল করতেন। তারপর মাথার চুল এমনভাবে খেলাল করতেন, যাতে ধারণা হত, বোধহয় এতক্ষণে মাথার চামড়া ভিজে গেছে। তখন তিন বার মাথায় পানি দিতেন। তারপর সমগ্র শরীর ধৌত করে নিতেন।
আয়েশা (রাঃ) আরো বলেন, আমি এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লা-হু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম একই পাত্রের পানি দ্বারা এক সাথে গোসল করতাম। আমরা উভয়ে পাত্র হতে একত্রে অঞ্জলি ভরে পানি নিতাম।
২৭২। হাদীসঃ হযরত মায়মূনা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লা-হু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম জানাবাতের গোসলের জন্য পানি রাখলেন। তারপর দু'বার বা তিনবার ডান হাতে বাম হাতের উপর পানি ঢাললেন এবং তাঁর লজ্জাস্থান ধুইলেন। তারপর তাঁর হাত মাটিতে বা দেওয়ালে দু'বার বা তিনবার ঘষলেন। পরে তিনি কুলি করলেন ও নাকে পানি দিলেন এবং চেহারা ও দু'হাত ধুইলেন। তারপর তাঁর মাথায় পানি ঢাললেন এবং তাঁর শরীর ধুইলেন। একটু সরে গিয়ে তাঁর পা ধুইলেন। মায়মূনা (রাঃ) বলেন, এরপর আমি একখন্ড কাপড় দিলে তিনি তা নিলেন না, বরং নিজ হাতে পানি ঝেড়ে ফেলতে থাকলেন।
২৭৩। হাদীসঃ হযরত আবু হোরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, একদা নামাযের জন্য একামত বলা হয়েছে। কাতার সোজার করা হয়েছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লা-হু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম হুজুরা থেকে বের হয়ে এসেছেন। যখন তিনি নামায আদায়ের উদ্দেশ্যে মুসাল্লায় দাঁড়ালেন হঠাৎ তাঁর স্মরণ হল তিনি অপবিত্র (তাঁর উপর গোসল ওয়াজিব)। তিনি আমাদেরকে বললেন, তোমরা অপেক্ষা কর। তারপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লা-হু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম হুজরায় চলে গেলেন। অতঃপর গোসল সেরে পুনরায় মসজিদে উপস্থিত হলেন। সে সময় তাঁর মাথার চুল থেকে পানি ঝরছিল। অতঃপর তিনি নামাযের জন্য তাকবীর বললেন। আমরা তাঁর সাথে নামায আদায় করলাম।
২৭৪। হাদীসঃ হযরত মায়মূনা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লা-হু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর জন্য গোসলের পানি রাখলাম এবং কাপড় দিয়ে পর্দা করে দিলাম। তিনি দু'হাতের উপর পানি ঢেলে উভয় হাত ধুয়ে নিলেন। তারপর ডান হাত দিয়ে বাম হাতে পানি ঢেলে লজ্জাস্থান ধুইলেন। পরে হাতে মাটি লাগিয়ে ঘষে নিলেন এবং ধুয়ে ফেললেন। এরপর কুলি করলেন, নাকে পানি দিলেন, চেহারা ও দু'হাত (কনুই পর্যন্ত ) ধুইলেন। তারপর মাথায় পানি ঢাললেন ও সমস্ত শরীরে পানি পৌছালেন। তারপর একটু সরে গিয়ে দু'পা ধুয়ে নিলেন। এরপর আমি তাঁকে একটা কাপড় দিলাম কিন্তু তিনি তা নিলেন না। তিনি দু'হাত ঝাড়তে ঝাড়তে চলে গেলেন।
২৭৫। হাদীসঃ হযরত আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, আমাদের মহিলাদের মধ্যে যখন কারো (অপবিত্রতাহেতু) গোসলের প্রয়োজন হত, তখন তিনি তিন বার করে উভয় হাত দ্বারা মাথার ডান দিকে এবং অপর হাতে আমার বাম দিকে পানি ঢালতেন।
২৭৬। হাদীসঃ হযরত আবু হোরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লা-হু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, বনী ইসরাঈলের লোকেরা উলঙ্গ হয়ে একত্রে গোসল করত, একে অপরের দিকে দেখত। আর হযরত মূসা (আঃ) একাকী গোসল করতেন। তারা বলত, আল্লাহর শপথ! হযরত মূসা (আঃ)-কে আমাদের সাথে একত্রে গোসল করতে কে নিষেধ করল? নিশ্চয়ই তার অন্ডকোষদ্বয় বড়, তাই তিনি একাকী গোসল করছেন।
একদিন মূসা (আঃ) গোসল করতে গেলেন। কাপড় খুলে তিনি এক পাথরের উপর রাখলেন। হঠাৎ উক্ত পাথর তাঁর কাপড়সহ ভাগতে লাগল। এ দেখে মূসা (আঃ) পাথরের পেছনে দৌড়াতে লাগলেন আর ডাকতে লাগলেন, হে পাথর! আমার কাপড়!, হে পাথর! আমার কাপড়! এ অবস্থায় বনী ইসরাঈলগণ তাঁর গোপন স্থান দেখতে পেয়ে বলল, আল্লাহর শপথ! মূসা (আঃ)-এর তো কোন প্রকার দোষ নেই। বেহুদা তাঁকে দোষারোপ করা হয়েছে। অতঃপর পাথর থেমে গেলে মূসা (আঃ) কাপড়খানা হাতে নিয়ে রাগের কারণে পাথরকে মারতে লাগলেন।
হযরত আবু হোরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, আল্লাহর শপথ, মূসা (আঃ)-এর আঘাতে উক্ত পাথরে ছয় অথবা সাতটি চিহ্ন পড়ে গিয়েছিল। আবু হোরায়রা (রাঃ) হতে আরো বর্ণিত আছে, এক সময় হযরত আইউব (আঃ) উলঙ্গ অবস্থায় গোসল করছিলেন। হঠাৎ স্বর্ণের ফড়িং তাঁর গায়ে পড়তে লাগল। তিনি সেগুলো ধরে ধরে কাপড়ে ভরতে লাগলেন। আল্লাহ তাঁকে ডেকে বললেন, হে আইউব! আমি কি তোমায় এসব কিছু থেকে বেপরওয়া করিনি, যা তুমি এখন দেখতে পাচ্ছ? উত্তরে হযরত আইউব (আঃ) বললেন, হে আল্লাহ! তোমার ইজ্জতের কমস! আমি কিন্তু তোমার বরকত থেকে বেপরওয়া হইনি।
২৭৭। হাদীসঃ হযরত আবু মোররা (রাঃ) স্বীয় মনিব হযরত উম্মে হানী বিনতে আবী তালেব (রাঃ) হতে রেওয়ায়াত করেন, তিনি উম্মে হানী (রাঃ)-কে বলতে শুনেছেন-আমি ফতেহ মক্কার দিন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লা-হু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে সাক্ষাত করতে গেলে তাঁকে গোসল করতে দেখি হযরত ফাতেমা (রাঃ) তাঁকে পর্দা করছেন। এমতাবস্থায় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লা-হু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার উপস্থিতি অনুভব করে বললেন, কে এসেছে? তখন আমি বললাম, আমি উম্মে হানী বিনতে আবী তালেব।
২৭৮। হাদীসঃ হযরত মায়মুনা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লা-হু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম একদা পবিত্রতার গোসল করছিলেন। তখন আমি তাঁর জন্য পর্দার ব্যবস্থা করেছিলাম। তিনি প্রথমে হস্তদ্বয় ধৌত করলেন। তারপর ডান হাতে পানি নিয়ে বাম হাতে গোপন স্থানে যা কিছু লেগেছিল তা ধৌত করলেন। অতঃপর হাত দেয়ালের সাথে অথবা মাটিতে মালিশ করলেন। তারপর পা ব্যতীত নামাযের অযুর ন্যায় অযু করলেন। অতঃপর সমগ্র শরীরে পানি ঢেলে দিলেন। তারপর সে স্থান থেকে সরে গিয়ে পা মোবারকদ্বয় ধৌত করলেন।
২৭৯। হাদীসঃ হযরত উম্মুল মোমেনীন হযরত উম্মে সালমা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, একদা হযরত আনাস (রাঃ)-এর মাতা 'উম্মে সোলায়েম' (আবু তালহার বিবি) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লা-হু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর খেদমতে উপস্থিত হয়ে বললেন, ইয়া রাসূলুল্লাহ! মহান আল্লাহর শান হল, তিনি হক কথা বলতে লজ্জাবোধ করেননি। তাই আমার প্রশ্ন, মহিলাদের যখন স্বপ্নদোষ দেখা দেয় তখন তার কি গোসল ওয়াজিব? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লা-হু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করলেন, হাঁ (মহিলাদেরও পবিত্রতার গোসল করা ওয়াজিব), যখন সে পানি দেখতে পাবে। অর্থাৎ স্বপ্নদোষের কারণে মনি ইত্যাদি বের হবে।
২৮০। হাদীসঃ হযরত আবু হোরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, একদা মদীনা শরীফের রাস্তায় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লা-হু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে তাঁর সাক্ষাৎ হল, যখন তিনি অপবিত্র ছিলেন। আবু হোরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, আমি নিজেকে অপবিত্র মনে করে বাড়ীতে চলে গেলাম এবং গোসল সেরে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লা-হু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর খেদমতে উপস্থত হলাম। ততক্ষণ তিনি আমার অপেক্ষায় ছিলেন। তাই আসামাত্র আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, হে আবু হেরায়রা। এতক্ষণ তুমি কোথায় ছিলে? আমি বললাম, হুযুর! আমি অপবিত্র ছিলাম। তাই আপনার সাথে বসা অপছন্দ করেছি। এতদশ্রবণে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লা-হু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, সোবহানাল্লাহ! মো'মেন কখনো অপবিত্র হয় না।
২৮১। হাদীসঃ হযরত কাতাদা (রহঃ) থেকে বর্ণিত, হযরত আনাস ইবনে মালেক (রাঃ) লোকদের কাছে বর্ণনা করেছেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লা-হু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম একই রাতে স্বীয় বিবিদের কাছে তওয়াফ করতেন। অর্থাৎ অপবিত্র অবস্থায়ই তাদের সাথে মিলামেশার জন্য যাতায়াত করতেন সে সময় তাঁর বিবিদের সংখ্যা ছিল নয় জন।
২৮২। হাদীসঃ হযরত আবু হোরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লা-হু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার সাথে সাক্ষাত করলেন। তখন আমি জুনুবী ছিলাম। অতঃপর তিনি আমার হাত ধরে হাঁটতে লাগলেন, চলতে চলতে এক জায়গায় বসে পড়লেন। তারপর আমি চুপিসারে সরে গিয়ে বাড়ি থেকে গোসল সেরে এসে দেখি তিনি বসেই আছেন। তিনি বললেন, হে আবু হুরায়রা এতক্ষণ তুমি কোথায় ছিলে? আমি অনুপুস্থিতির কারণ বর্ণনা করলাম। তখন তিনি বললেন, সুবহানাল্লাহ! মোমেন কখনো অপবিত্র হয় না।
২৮৩। হাদীসঃ হযরত আবু সালমা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আয়েশা (রাঃ)-কে জিজ্ঞাসা করলাম, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লা-হু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম কি জানাবাতের অবস্থায় ঘুমাতেন? তিনি বললেন, হ্যাঁ তবে তিনি অযু করে নিতেন।
২৮৪। হাদীসঃ হযরত উমর ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লা-হু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে জিজ্ঞেসা করেন, আমাদের কেউ জানাবাতের অবস্থায় ঘুমাতে পারবে কি? উত্তরে তিনি বরলেন, হাঁ, অযু করে নিলে জানাবাতের অবস্থায়ও ঘুমাতে পারে।
২৮৫। হাদীসঃ হযরত আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লা-হু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন জানাবাতের অবস্থায় ঘুমাতে্ ইচ্ছা করতেন তখন তিনি লজ্জাস্থান ধুয়ে নামাযের মত অযু করতেন।
২৮৬। হাদীসঃ হযরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, উমর (রাঃ) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লা-হু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে জিজ্ঞেস করলেন, আমাদের কেউ জুনুবী অবস্থায় ঘুমাতে পারবে কি? তিনি বললেন, হাঁ, যদি অযু করে নেয়।
২৮৭। হযরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিন বলেন, উমর ইবনুল খাত্তাব (রাৎ) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লা-হু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বললেন, রাত্রে কোন সময় তাঁর জানাবাতের গোসল ফরজ হয় (তখন কি করতে হবে?) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লা-হু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে বললেন, অযু করবে, লজ্জাস্তান ধুবে, তারপর ঘুমাবে।
২৮৮। হাদীসঃ হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লা-হু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,কেউ স্ত্রীর চার শাখার মাঝে বসে তার সাথে সংগত হলে , গোসল ওয়াজিব হয়ে যায়।
আবু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) বলেন, এটা উত্তম ও অধিকতর মযবুত। মতভেদের কারণে আমরা অন্য হাদীসটিও বর্ণনা করেছি, গোসল করাই অধিকতর সাবধানতা।
২৮৯। হাদীসঃ হযরত যায়েদ ইবনে খালেদুল জুহানী (রাঃ) হযরত ওসমান (রাঃ)-কে প্রশ্ন করলেন, স্বামী যখন স্ত্রীর সাথে সঙ্গেম করে, কিন্তু বীর্যপাত হল না, তখন সে কি করবে? এ ব্যাপারে আপনার অভিমত কি? হযরত ওসমান (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তখন সে নামাযের অযুর ন্যায় অযু করে পুরুষাঙ্গ ধৌত করে নিবে। তিনি আরো বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লা-হু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে এ কথা শুনেছি। হযরত যায়েদ ইবনে খালেদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, অতঃপর আমি এ মাসআলা সম্পর্কে হযরত আলী (রাঃ) ইবনে আবী তালেব, যোবায়ের ইবনুল আওয়াম তালহা বিন ওবায়দুল্লাহ এবং উবাই বিন কা’ব (রাঃ)-এর কাছেও জিজ্ঞেস করলাম। তাঁরা সবাই আমাকে অনুরুপ বলেছেন।
২৯০। হাদীসঃ হযরত আবু আইউব আনসারী (রাঃ) থেকে বর্ণিত, আমাকে হযরত উবাই ইবনে কা’ব (রাঃ) খবর দিয়েছেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লা-হু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, স্বামী যদি তার স্ত্রীর সাথে সঙ্গম করে, কিন্তু বীর্যপাত হল না, বীর্যপাতের পূর্বেই সরে আসল, তখন সে পুরুষাঙ্গে যা কিছু লেগেছে তা ধৌত করে তারপর অযু করবে এবং নামায আদায় করবে।
হযরত ইমাম বোখারী (রাঃ) থেকে বর্ণিত, এ অবস্থায় গোসল করাই উত্তম। উপরের হাদীস দু’খানা সাহাবাদের মতপার্থক্যের কারণে আমি এস্থলে বর্ণনা করেছি। তবে পবিত্রতার জন্য পানির ব্যবহার অধিক গ্রহণযোগ্য।
0 comments:
Post a Comment
Thanks for your comments.